গত শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর ২০২২ আমাদের ই.এন.ভি ২০৩/ জিও ২০৫ কোর্সের ফিল্ড ট্রিপ হিসেবে আমরা টার্টল কনসারভেশন এলায়েন্স এবং ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক ঘুরে আসি।
ই.এন.ভি ২০৩/ জিও ২০৫ কোর্স মূলত আমাদের একটা জি.ই.ডি (জেনারেল এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ) কোর্স। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এর প্রতিটি স্টুডেন্টকেই এনভায়রনমেন্ট ২০৩ অথবা এর অপশনাল হিসেবে এনথ্রোপোলজি ১০১ অথবা সোসিওলজি ১০১ কোর্সটি করতে হয়। আমি সহ অনেকেরই ই.এন.ভি ২০৩ বা জিও ২০৫ কোর্স নেওয়ার অন্যতম কারণ ছিল এই ফিল্ড ট্রিপ।
আমাদের কোর্স এর ইন্সট্রাক্টর ছিলেন রাফিদ মাহমুদ খান স্যার (FMK)। স্যার পুরো কোর্স জুড়ে ছিলেন স্টুডেন্ট ফ্রেন্ডলি এন্ড আন্ডারস্টেন্ডিং। ট্রিপ এর প্রতিটি আয়োজন ছিল গোছানো এবং উপভোগ্য। বলে রাখা ভালো এই ফিলড ট্রিপ এ ছিল কোর্সের ১০% মার্ক। ফিল্ড ট্রিপ এ দেখানো এবং শিখানো ল্যানিং আউটকাম রিপোর্ট লিখে সাবমিট করতে হবে।
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে,
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় উদ্যান। এই উদ্যানটি রাজধানী ঢাকা থেকে উত্তরে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গাজীপুর জেলার গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর উপজেলায় অবস্থিত। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন (১৯৭৪) আইন অনুসারে বাংলাদেশ সরকার ৫,০২২ হেক্টর (১২,৪০৯ একর) জায়গা জুড়ে পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দেশের মতো করে ভাওয়াল শালবনে এই উদ্যান গড়ে তোলে। তবে এটি ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠা পেলেও ১৯৮২ সালের আগে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি।
শুক্রবার সকাল ৮:৩০ এ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ৮ নম্বর গেট থেকে আমাদের যাত্রা শুরু হয়। বাসে উঠেই ব্রেকফাস্ট সার্ভ করা হয়। বাসের পিছনের সারিতে পুরো পথ আমরা আড্ডা, গান আর মাঝে মাঝে বাসের ঝাকুনিতে কখন গন্তব্যে পৌঁছে যাই টেরও পাই নি। বাস থেকে নেমে স্যার আমাদের প্রথমেই নিয়ে যান টার্টল কনসারভেশন এলায়েন্স এ । সেখানে ফাহিম জামান (ক্রিয়েটিভ কনসারভেশন এলায়েন্স এর ফেসিলিটি ম্যানেজার ) আমাদেরকে টার্টল এর ফুড হ্যাবিট, সংরক্ষণ পদ্ধতি, ব্রিডিং মেথড, মেল্ এবং ফিমেল টার্টল চেনার উপায় সব কিছু নিয়ে একটা ধারণা দেন। তিনি আমাদেরকে ডিফারেন্ট টাইপের টার্টল এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর ক্রিয়েটিভ কনসারভেশন এলায়েন্স এর আওতায় বিভিন্ন রকম প্লান্ট এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন ।
নামাজ শেষে টার্টল কনসারভেশন এলায়েন্স এর সামনে গ্রুপ ফটো সেশন শেষে আমরা আবার বাস এ উঠে পড়ি। প্রায় দশ মিনিট মধ্যেই গাজীপুর ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক মেইন গেট হয়ে আমরা চলে আসি অর্চিড রেস্ট হাউস এর সামনে। ফ্রেশ হয়ে আমরা লাঞ্চ সেরে ফেলি। খানিকটা রেস্ট নিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে ঘুরে আসি ওয়াচ-টাওয়ার থেকে। এরপর ব্যাক করে অর্চিড রেস্ট হাউস এর সামনের হালকা গাছে ঘেরা জায়গাটা ফিল্ড বানিয়ে আমরা ফুটবল খেলতে শুরু করি।
মাগরিবের পর আমরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হই। যাত্রা শুরুর স্থান অর্থাৎ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ৮ নম্বর গেট এর সামনে নেমে আমরা যে যার মতো বাসায় ব্যাক করি।
মিড কুইজের এর এই রোলার কোস্টার সেমিস্টার এ একদিনের জন্য সকল বিষণ্ণতাকে ছুটি জানিয়ে প্রকৃতির সাথে কিছুটা সময় কাটিয়ে মাস্কবিহীন বিশুদ্ধ অক্সিজেন নিয়ে বাড়ি ফেরা। দিনটি সত্যিই চমৎকার ছিল।