DARJEELING TRIP - Part 03 (দার্জিলিং ভ্রমণ - পর্ব-০১)
DARJEELING TRIP - Part 02 (দার্জিলিং ভ্রমণ - পর্ব-০২)
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সকাল ৮ টার মাঝেই বের হয়ে পড়ার কথা ছিল । আজকে যাওয়ার প্ল্যান কালিম্পঙ (Kalimpong) এ। দার্জিলিং শহর থেকে মোটামোটি ৬১ কিলোমিটার ডিসটেন্স কালিম্পঙ (Kalimpong) এর। যেতে আমাদের বেশ সময় লেগে যাবে । তাই যত আগে বের হতে পারবো তত বেনিফিট হবে। সকাল ৮ তার কিছুক্ষন আগে উঠে ঠান্ডা এবং বৃষ্টির মাঝে হট শাওয়ার নিয়ে নেই রেডি হয়ে নেই। এরপর ব্রেকফাস্ট এর জন্য হোটেল এর ডাইনিং এ চলে আসি। ৮ তার মধ্যে সুৱাগ দা থাকার কথা থাকলেও সুৱাগ দা ৯ তার পরে আসে। দ্রুত বের হয়ে পড়ি নাহলে সাইট সিইং মিস হয়ে যাবে। বেশ জ্যাম সামলিয়ে যেতে হচ্ছিলো। দার্জিলিং এর দিকে বিজেপি এর মিটিং থাকার কারণে রোড এ অনেক জ্যাম ছিল।
ঘন্টা দুই এর পরে দার্জিলিং লাভার্স পয়েন্ট (Lovers' Meet View Point - Tinchuley Village) এ ব্রেক নেই। লুপ এর মতো রোড এ ঘুরতে ঘুরতে বেশ মাথা ধরে ছিল। লাভার্স পয়েন্ট এর ভিউ বেশ সুন্দর ছিল। আমি চা নিয়ে ভিউ দেখতে দেখতে পুরো মেঘে ঢেকে যায় ভিউ পয়েন্ট।
আবার গাড়িতে উঠে বসি এখনো বেশ অনেক পথ আমাদের যেতে হবে। আরো ঘন্টা দুই এর মতো লেগে যায় কালিম্পঙ পৌচাতে (Kalimpong ) । আঁকা বাঁকা রোড পেরিয়ে প্রথেমেই চলে আসি কালিম্পঙ এর ডেলো পার্ক এ (Delo Park).
ডেলো পার্ক হল মূলত একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট ভারতের কালিম্পং-এর দেওলো পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত৷। পার্কটিতে ফুল, ল্যান্ডস্কেপ বাগান, এবং বিনোদনমূলক যেমন প্যারাগ্লাইডিং এবং শিশুদের জন্য একটি খেলার জায়গা রয়েছে৷। এই পার্কটি একটি প্যানোরামিক 360- কালিম্পং শহর এবং এর পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের ডিগ্রী ভিউ। ডেলো হিল হল কালিম্পং শহরের সর্বোচ্চ পয়েন্ট, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 1,704 মিটার উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছে।
পার্ক আমার বরাবরই অপছন্দের । পার্ক এ একটু ঘুরে দেখে চলে যাই কালিম্পঙ সাইন্স সেন্টার (Kalimpong Science Centre) এ। ডেলো পার্ক থেকে সাইন্স সেন্টার এর ডিসটেন্স খুব একটা বেশি না। সাইন্স সেন্টার এর ভিতরে ঢুকে আমি মুগ্ধ হয়ে যাই। সায়েন্স এর সব টপিক এর উপর সুন্দর সুন্দর প্রাকটিক্যাল এক্সাম্পল ডিভাইস বসানো ছিল।
সাইন্স সেন্টার এ ঘুরতে ঘুরতে অলমোস্ট দুপুর পার হয়ে গেছে। লামহাট্টা (lamahatta eco park) এন্ড পাইনভিউ নার্সারি (pine view nursery) এখনো দেখা বাদ ছিল । লামহাট্টা মূলত ইকো পার্ক আর পাইনভিউ নার্সারি দেখার ইচ্ছে ছিল না আর টাইম ও ছিল না। কালিম্পঙ এর রোড গুলোও উপভোগ করার মতো।
বিকাল হতে হতেই চারিদিকে অন্ধকার হয়ে গেলো। এর মাঝে আবার হালকা বৃষ্টি নামতে শুরু করেছে। রোড লুপ ঘুরতে ঘুরতে দার্জিলিং এর কাছাকাছি চলে আসি। সন্ধ্যা ৭ তার আশেপাশেই হোটেলে পৌঁছাই । মূলত দার্জিলিং আজকে লাস্ট ডে। লাস্ট বারের মতো দার্জিলিং রোড এনজয় করতে চাই এন্ড ফ্যামিলির জন্য হালকা কিছু কিনতে হবে তাই আমি হোটেলে এসে দ্রুত ফ্রেশ হয়ে চা খেয়ে একটু রেস্ট নেই। এরপর বের হয়ে পড়ি দার্জিলিং এ কাটানো প্রতিদিনের মতো আশেপাশে ঘুরা । রোড সাইড শপ থেকে হালকা কিছু কিনে নেই। আর সাথে কয়েক প্যাকেট চা-পাতা কিনে নেই। কারণ আর সময় পাবো না। হালকা রোমিং করতেই বৃষ্টি নেমে আসে। বৃষ্টির মাঝেই দার্জিলিং এর মোমোস সেকেন্ড বার মতো ট্রাই করি।
রাতের ডিনার শেষে ১১ তার দিকে হোটেলে চলে আসি। কাল ভোর ৩ তার দিকে উঠতে হবে। ভোরে টাইগার হিল এ সান রাইস দেখে ডাইরেক্ট রওনা দিবো শিলিগুড়ির দিকে। দেরি না করে ব্যাকপ্যাক রেডি করে ঘুমিয়ে পড়ি।
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ভোর ৩ টা। উঠে দ্রুত রেডি হয়ে সুৱাগ দা কে ফোন দেই । সুৱাগ দা ওন দা ওয়ে। ৩০ মিনিট পরে রওনা হয় টাইগার হিল এর দিকে। ঘন্টা এক এর মতো সময় লাগে টাইগার হিল (Tiger Hill Darjeeling) পৌঁছাতে। প্রচুর মানুষ তখন টাইগার হিলের দিকে। সবার অপেক্ষা সূর্যোদয় দেখা। আমি আগেই দেখে এসেছিলাম সান রাইস এর টাইম। ৫:৩০ এর দিকে সূর্যের রেড রে হালকা চোখে পরে বাট অল্প সময়ের মাঝেই মেঘ এসে সব মিশে দিয়ে যায়।
ঠান্ডায় বেশ অবস্থা খারাপ আমার তাই আর দাঁড়িয়ে না থেকে গাড়িতে উঠে বসি শিলিগুলির দিকে রওনা হওয়ার । সূরাগ দা বেশ ঘন্টা কিছু পরে আমাকে ডেকে উঠিয়ে দেয় রোড সাইড এর একটু রেস্তোরায। হালকা সকালের নাস্তা সেরে ফেলি। ১০ তার পরপরেই পৌঁছে যাই শিলিগুড়ি শ্যামলী বাস কাউন্টার এ। ১:৩০ এ শ্যামলীতে ইমিগ্রেশন পোর্ট এর দিকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। এর মাঝেই দুপুরের লাঞ্চ আর হাতে বেশ টাইম থাকার কারণে শিলিগুড়ি বিধান মার্কেট এন্ড হংকং মার্কেট ঘুরে আসি সাথে টুকটাক কেনাকাটা করে ফেলি।
বাস ২ তার দিকে ছেড়ে দেয় । ৪ তার মাঝেই ইমিগ্রেশন এ পৌঁছে যাই। খুব কম সময়ের মাঝে ডিপার্চার সিল কমপ্লিট হয়ে যায়। পোর্ট মার্কেট থেকেই বেশ কিছু ড্রিঙ্কস এন্ড চকলেট কিনে বাংলাদেশ বর্ডার এ চলে আসি। ফ্রেশ হয়ে বাস এ উঠে পড়ি। ৭ তার দিকেই বাস ছেড়ে দে। ২৫ তারিখ সকাল ৯ টায় গাবতলী বাস টার্মিনাল পৌঁছে যাই। ১১ তার দিকে বাসায় চলে এসে বিকালের ক্লাস কুইজ দিয়ে বাসায় গিয়ে ঘুম।
প্রথম বারের মতো দেশের বাইরে ট্রাভেল। পুরো জার্নি খুবই স্মুথ ছিল। কোনো প্রব্লেম ফেস করতে হয় নি। সব মিলিয়ে দার্জিলিং ট্রিপ আমার মনে একটা আলাদা জায়গা করে থাকবে।
For more Travel Story : https://fahimmuntashir.com/travel
Follow me on FLICKR , UNSPLASH , 500PX, PortraitMode
Leave a comment
Your email address will not be published. Required fields are marked *